জার্নালিজম একটা থ্যাংকলেস জব। এটা মাথায় রেখেই এই পেশায় এসেছি। আমি খুব শখ করে জার্নালিজম পড়েছিলাম। আমার চেয়ে অবশ্য আমার মায়ের আগ্রহটাই বেশি ছিল। ভার্সিটিতে ভর্তির সময় চয়েজ ফরম পূরণে ১/২/৩- তিনটাতেই আমি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা লিখেছিলাম। ত্রপা ম্যাম খুব অবাক হয়েছিলেন আমার ফরম টা হাতে নিয়ে। উনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন- এ্যাই মেয়ে কি করেছো এটা ? যদি জার্নালিজম না পাও তাহলে কি করবে ? বাড়ি যেয়ে পাশের গ্রামের কলেজে ভর্তি হবো -এটাই ছিল আমার উত্তর। (কারণ আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খ ইউনিট ছাড়া আর কোথাও ফরম তুলি নি)। আমার তখনকার ওজন ছিল ৩৯ কেজি। এমন ছোটখাট কারো মুখ থেকে এমন কথা শুনে উনি বেশ অবাক হয়েছিলেন।
অবশেষে আমি জার্নালিজমেই ভর্তি হলাম। আমি মিছিলের ফাঁকে ফাঁকে ক্লাস করতাম। পড়াশোনা শেষ করে বিবার্তা শুরুর আগে আমি অনলাইন নিয়ে প্রচুর পড়েছি, খোঁজখবর নিয়েছি। রীতিমত গবেষণাও করেছি।
বিবার্তা খুব ছোট একটা নিউজপোর্টাল। কিন্তু আমি দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি- বিবার্তা কখনো গল্প লেখে না। উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ ছাড়া একটা শব্দও পাবলিশড হয় না এখানে। হাজারটা দিন পজিটিভ নিউজ করার পরও কেউ কোনদিন একটা থ্যাংক ইউ বলেন না। কিন্তু পান থেকে চুন খসলেই তদবিরের যন্ত্রণায় জীবন অতিষ্ঠ করে দেন।
আমার জন্ম ৭ মাসের ও আগে। আমার বেঁচে থাকার কথা ছিল না। মাকে বাঁচানোর জন্য আমাকে বের করা হয়েছিলো। আমি বাইচান্স বেঁচে গেছি। গত নভেম্বরে আমি যখন কোভিভ পজিটিভ হই; শরীর বেশ খারাপ হয়ে যায়। ডায়বেটিক এবং এ্যাজমার কারণে ভীষণ দূর্বল হয়ে যাই। হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিলো। হাসপাতাল থেকে আমার বাসায় ফেরার কথা ছিল না। দুই দুইটা বোনাস লাইফ নিয়ে বেঁচে আছি আমি। আমার আসলে ভয়ডর নেই; কোন পিছুটান নেই। জীবনের প্রতি কোন মায়া নেই। আমার হারানোর কিছু নেই।
চাপ, তদবির, ভয়, অনুরোধ, সম্পর্ক, অনুরাগ,প্রেম - নিউজের বেলায় সব অকার্যকর। আমি যখন সম্পাদকের চেয়ারটাতে বসি আমার সামনে তখন পাঠকের মুখ ছাড়া আর কোন মুখ ভাসে না। প্রয়োজনে সাংবাদিকতা ছেড়ে দিয়ে ভাতের হোটেল দেবো তারপরও আপোস করবো না।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন