গেলো না দুখুর দুঃখ
লায়লা আরজুমন শিউলী
আসানসোলের রুটির দোকানের
সামান্য কর্মচারী,
মক্তবে কভু আরবী পড়াত
দুখু মিয়া নামধারী।
লেটো গানের দলে,গান গেয়ে কভু
কেটেছে দুখুর দিন,
মসজিদে কভু আজান দিয়ে সে
হয়েছে মোয়াজ্জিন।
দেশের সেবায় সৈনিক হয়ে
অস্ত্র হস্তে তুলে,
প্রেয়সীরে ফেলে চলে যেতে তার
নয়ন ভাসলো জলে।
হস্তে অস্ত্র,নয়নে অশ্রু
ভিতরে বাহিরে জ্বালা,
জাগতো রজনী,গাঁথতো একাকী
গল্প কথার মালা।
থেকে থেকে তার নয়নে ভাসতো
প্রেয়সীর মুখখানি,
ঝরে ঝরে ফুল,খালি হয়ে যেতো
হৃদয়ের ফুলদানী।
বিরহ ব্যথায় পুড়ে পুড়ে শেষে
পেলো প্রমিলার হাত,
সরষের মত হরষের ফুল
ফুটে হলো বাজিমাত।
অভাবেও তারা বাঁচতে চেয়েছে
প্রাণে প্রাণে এক হয়ে,
একে একে দুই,দুইয়ে দুইয়ে চার
যাচ্ছিলো দিন বয়ে।
প্রেমের ভূবনে, ছিল দুইজনে
সুখের পঙ্খীরাজ,
রোগে ভোগে ভোগে,তামা হয়ে গেলো
সোনালী দেহের ভাঁজ।
অসময়ে এলো প্রমিলার ডাক
গেলো সে দুখুরে ছেড়ে,
গেলো বুলবুল,সব্যসাচী
একা সে রইলো পড়ে।
নিঃসঙ্গ আর শুন্য বিছানা
নির্বাক তার আঁখি,
কত বেদনার পুষ্প ঝরাতো
চেয়ে সে উর্ধ্ব মূখী।
চোখে নেই জল,মুখে নেই ভাষা
বক্ষেতে হাহাকার,
প্রিয়তর সেই মুখগুলি তার
ছিল না তো হারাবার।
এতো কষ্টের যন্ত্রণা ভার
সইতে না পেরে অবশেষ
মুদিলো নয়ন,হৃদ কম্পন
থেমে হলো নিঃশেষ।
দুঃখের মাঝে জন্ম দুখুর
দুঃখেই বসবাস,
দুঃখের সাথে লড়াই করে সে
পায়নি তো অবকাশ।
একটি নামের দাম দিতে বুঝি
দেখেনি সুখের মুখ,
সার্থক হলো মা'র দেয়া নাম
গেলো না দুখুর দুখ্।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন