গতকাল রাত সাড়ে আটটায় অচেনা একটি নম্বর থেকে কল এলো। ওপাশে এক নারী কন্ঠ। ফোন করেই শিশুদের মতো কান্না। বুকের ভিতরটা নড়ে উঠলো। তাকে মন দিয়ে শুনলাম। জানালেন, টানাটানির সংসার। বিকাশ একাউন্টে কিছু টাকা ছিল। তাই দিয়ে টানাটানি করে সংসার চলছিল। করোনায় আয়রোজগার নেই। সর্বশেষ সম্বল এগারো হাজার টাকা ছিল বিকাশে। তাই, দিয়ে শিশু সন্তানাদি নিয়ে চলতে হবে আরো অনেকদিন। গতকাল বিকালে মোবাইল হাতে নিয়ে বিকাশের দোকানে গিয়েছিলেন। কিছু টাকা তুলবেন। দোকানদার কৌশলে তার সব টাকা তুলে নিয়েছে। বাড়ি ফিরে দেখেন তার অ্যাকাউন্ট শূণ্য। মূহুর্তেই চিৎকার দিয়ে ছুটে যান সেই দোকানে। দোকানদার তাকে তাড়িয়ে দেয়। এর ওর কাছে গেলেন। লাভ হলো না। স্বামীকে জানালেন। স্বামী বলেছেন, এই টাকা ফেরত আনতে না পারলে তাকে তালাক দিবেন। টাকা না নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারবে না। দু’চোখে শূণ্যতা ছাড়া আর কিছুই দেখছেন না তিনি।
বিকাশের দোকানদার হলেন স্থানীয় মেয়রের কর্মচারী। ভাবলেন, এখানে পেরে ওঠা সহজ নয়। কোত্থেকে পেয়েছেন আমার নম্বর। কল করেই কান্না। শুনলাম, বললাম, তিনি একা নন। পাশে আছি। থাকলাম। ফোন করলাম ওসি লালমনিরহাট সদর মো. শাহা আলমকে। তিনি নামাজে। কথা বললাম, ডিউটি অফিসারের সাথে। বুঝিয়ে বললাম, তাৎক্ষনিক আটক করতে হবে অভিযুক্তকে। নামাজ শেষে ফোন করলেন ওসি লালমনিরহাট। তাকেও বললাম, ধরে আনতে হবে অভিযুক্তকে, অভিযোগ সত্য হলে টাকা উদ্ধার করতে হবে। সংসার বাঁচাতে হবে মেয়েটির। ওসি লালমনিরহাট সদর খুব তৎপর হলেন। টের পেয়ে গা ঢাকা দিয়েছে অভিযুক্ত। তাকে খুঁজে বের করে ধরে আনা হলো। রাতেই টাকা ফেরত পেয়েছে মেয়েটি। টাকা পেয়েই জানিয়েছে, বাড়ি ফিরছে। অপেক্ষা করে আছে তার সন্তান ও পরিবার।
[বি.দ্র.ঃ অনেকেই আসেন। চেষ্টা করেও কারো কারো সমস্যা সমাধান করতে পারি না। তারা মনক্ষুন্ন হন। তাই বলে রাখি, এ ধরনের কাজে আমাকে দায়িত্ব দেয়া হয়নি। কোনো বাধ্যবাধকতাও নেই। কিন্তু, কিছু সাধারণ সুযোগ থাকে আমাদের সবারই। সেটি কাজে লাগিয়ে যদি মানুষের পাশে কিছুটা দাঁড়ানো যায় মন্দ কি? তবে, যে কোনো পুলিশি বিষয়ে সরাসরি থানা বা তার উধ্বর্তন অফিস সমূহের কাছ থেকেই আইনি সেবাটি আদায় করে নেয়া উচিত। ব্যতিক্রমী কিছু ক্ষেত্রে, যখন সকল চেষ্টা করেও আপনার কাঙ্খিত সেবাটি পেতে ব্যর্থ হবেন, তখন নিশ্চিতভাবেই আপনার পাশে পেতে পারেন আমাকে, যদিও আমার সুযোগ, সামর্থ্য ও অথরিটি অবারিত নয়।]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন