এমপি বাহারকে নিয়ে প্রার্থী ও ভোটারদের যত ভয়, রিফাতের অভিযোগ কালো টাকা

 

এমপি বাহারকে নিয়ে প্রার্থী ও ভোটারদের যত ভয়, রিফাতের অভিযোগ কালো টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক : কুমিল্লা মহাণগর আওয়ামী লীগের সভাপতি স্থানীয় সাংসদ আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। দলীয় মনোনয়নে কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে লড়ছেন তার নিজের অনুগত একই মহাণগর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত। নির্বাচনে ণৌকার প্রার্থী রিফাতকে জয়ী করতে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তকে অম্যান্য করে তার অনুগতদের দিয়ে সশস্ত্র মহড়া দিয়ে পুরো সিটি দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তার অনুসারীরা। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকদের হুমকি-ধমকিও দিচ্ছেন। তাঁর প্রভাব নিয়েই প্রার্থী ও ভোটারদের যত ভয়-উৎকণ্ঠা। কুমিল্লা সিটির বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন সংশয়ের খবর পাওয়া গেছে।

জেলা প্রশাসন বলছে, ভোটের রাজনীতিতে কুমিল্লা এখনো তেমন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা নয়। তারপরেও সেখানকার ভোটকেন্দ্রের ভেতরে ভোটারদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া হবে।

জানা গেছে, কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচজন প্রার্থী রয়েছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত, স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু (বিএনপি), মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন কায়সার (বিএনপি), কামরুল আহসান বাবুল এবং ইসলামী আন্দোলনের রাশেদুল ইসলাম।

তবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগের আরফানুল হক রিফাত(ণৌকা), স্বতন্ত্রের মনিরুল হক সাক্কু (টেবিল ঘড়ি) ও নিজাম উদ্দিন কায়সার (ঘোড়া)। অন্যদিকে হাতপাখা প্রতীকের ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী রাশেদুল ইসলাম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল হাসানের কোনো প্রচারণা নেই। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী রিফাত ও বিএনপি থেকে অব্যাহতি পাওয়া মনিরুল হক সাক্কু ও নিজাম উদ্দিন কায়সারের অনুসারীদের মধ্যেই নির্বাচনী উত্তাপ রয়েছে। আর এতে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে নেপথ্য থেকে আওয়ামীলীগের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতকে সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সাংসদ আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের বিরুদ্ধে।

অপরদিকে এ সিটি নির্বাচনের প্রচারের শেষদিনে, স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুর বিরুদ্ধে কালো টাকা ছড়ানোর অভিযোগ এনেছেন নৌকার প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত।

তবে কোনো প্রমাণ ছাড়া এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন, বলেছেন সাক্কু। একই সাথে স্থানীয় এমপি বাহাউদ্দিন বাহারকে নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে কমিশন, এমন অভিযোগও করেন সাক্কু।

গত সোমবার নির্বাচনী প্রচারের শেষ দিন হলেও আলোচিত তিন মেয়র প্রার্থীর কেউই সেদিন প্রচারে বের হননি। তবে শেষ দিনেও সোস্যাল মিডিয়ায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করছেন মেয়র প্রার্থীরা।

একে অপরের বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ করছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেছেন নৌকার প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত।

মঙ্গলবার সকালে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন, ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু।

তারা পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে রিফাত বলেন, ভোটে কুমিল্লাবাসী ণৌকাকে জয়ী করবে বুঝতে পেরে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাক্কু কালো টাকা ছড়াচ্ছেন। এমনকি আমার কর্মীদেরও টাকা দেয়ার চেষ্টা করছেন। প্রশাসনের ভূমিকার সমালোচনা করেও আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী বলেন, সাবেক মেয়রের পক্ষে কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। তবে এর স্বপক্ষে প্রমাণ চেয়েছেন সাক্কু।

অন্যদিকে ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহরের নানুয়া দিঘির পাড়ের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে সাবেক মেয়র সাক্কু বলেন, রিফাত তো এমপির নমিনি। সে তো কিছু না। আমার প্রতিপক্ষতো রিফাত নয়, আমি এমপি বাহারের প্রতিপক্ষ। সব কলকাঠি করছেন স্থানীয় এমপি। আমি তার বিরুদ্ধে লড়ছি।

সাক্কু আরো বলেন, উনি ওনার সব দিয়ে চেষ্টা করছেন। উনার দেয়ার মতো কিছু নাই। উনার ক্ষমতা কতটুকু আমি জানি। যত কৌশল যত বাধা আসুক সবকিছু পেরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।

রিফাতের অভিযোগের জবাবে সাক্কু আরো বলেন, আমি প্রমাণ ছাড়া কথা বিশ্বাস করি না। টাকা দিলে সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা আছে তারা তো দেখবে। কখনোই ভোট কেনার জন্য টাকা দেই না।

তবে যে সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে সাক্কুর এতো অভিযোগ, তিনি গণমাধ্যমকে এড়িয়ে চলছেন বলে জানা যায়নি তার বক্তব্য।

উল্লেখ্য, দুটি পৌরসভা নিয়ে ২০১১ সালের জুলাই মাসে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন গঠিত হওয়ার পর এ পর্যন্ত দুটি নির্বাচন হয়েছে।

১০ বছর আগে প্রথম নির্বাচন নির্দলীয় প্রতীকে হলেও ২০১৭ সালে দলীয় প্রতীকে মেয়র নির্বাচন হয়। দুই নির্বাচনেই ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীকে পরাজিত করে জয়ী হয় বিএনপির প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন