নিজস্ব প্রতিবেদক: ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল ১০টা। ঢাকা-চট্টগ্রাম পুরোনো মহাসড়ক লাগোয়া কুমিল্লা নগরের নূরপুর মসজিদ এলাকায় একদল মানুষ জটলা করছেন। ভিড় ঠেলে উঁকি দিয়ে দেখা যায়, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী (ঘুড়ি প্রতীক) আফসান মিয়া জনসংযোগ করছেন। তাঁর সঙ্গে থাকা কর্মী সমর্থকদের হাতে ঘুড়ি প্রতীকের লিফলেট।
একপর্যায়ে আফসান মিয়ার পিছু নেন জনা বিশেক লোক। সবাই স্লোগান ধরেন ‘আমার মার্কা, তোমার মার্কা, ঘুড়ি ঘুড়ি।’ এরপর তিনি নূরপুর-হাউজিং এস্টেট সড়ক ধরে আশপাশের দোকানদার ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে হাত মেলান। ঘুড়ি প্রতীকের পক্ষে ভোট চান। সোমবার প্রায় দুই ঘণ্টা তাঁর নির্বাচনী জনসংযোগ প্রত্যক্ষকালে এ দৃশ্যের দেখা মেলে।
আফসান মিয়া ১৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। ১৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে এবারসহ টানা নয়বার প্রার্থী হয়েছেন তিনি। স্থানীয় লোকজন বলেন, আফসান মিয়া ১৯৭৪, ১৯৭৭, ১৯৮৪, ১৯৮৯, ১৯৯৩, ২০০০, ২০১২ ও ২০১৭ সালে কাউন্সিলর (আগে বলা হতো কমিশনার) প্রার্থী হয়েছেন। এর মধ্যে ১৯৭৭ ও ২০১২ সালে পরাজিত হন। বাকি ছয়বার জয়ী হয়েছেন। এবারের নির্বাচনেও তিনি প্রার্থী হয়েছেন।
এবার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে আফসান মিয়ার সঙ্গে আরও দুজন কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন। তাঁরা হলেন মিষ্টিকুমড়া প্রতীকের মোহাম্মদ শওকত আকবর ও করাত প্রতীকের নাসিম হোসেন।
আফসান মিয়া নূরপুর দক্ষিণ পাড়া এলাকায় জনসংযোগকালে এলাকাবাসী তাঁর কাছে নালা ও অভ্যন্তরীণ সড়ক সংস্কারের দাবি জানান। স্থানীয় নারীপুরুষ তাঁর পেছনে পেছনে হাঁটছিলেন। এ সময় এলাকাবাসীর সমস্যা সমাধান করবেন বলে জানান আসফান মিয়া।
সরেজমিনে নূরপুর দক্ষিণপাড়া, মুরাদপুর, কাটাবিল, হযরতপাড়া ও হাউজিং এস্টেট এলাকা ঘুরে বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এলাকার মানুষের সমস্যায় পাশে থাকেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ভোটার মোতাহের হোসেন মাহবুব বলেন, প্রায় ৫০ বছর ধরে নির্বাচন করছেন আফসান মিয়া। তিনি ছাড়া এত দীর্ঘ সময় কেউ নির্বাচনে অংশ নেননি। এলাকার সমস্যা সমাধানে তিনি আন্তরিক।
২৫ বছর ৫ মাস বয়সে প্রথমবার নির্বাচনে প্রার্থী হন বলে জানান আফসান মিয়া। তিনি বলেন, ‘এর পর থেকে প্রতিবারই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। মানুষ আমারে ভালোবাসে। তাঁরার অনুরোধে প্রার্থী হই। এই এলাকায় আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতি শুরু করি বঙ্গবন্ধুর আমলে।’
আফসান মিয়া আরও বলেন, ‘শহর আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলাম। চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষের সময় রুটি নিয়ে বাড়ি বাড়ি গেছি। এবার করোনাকালেও মানুষের পাশে ছিলাম। এই নির্বাচনে আমারে ডিস্টার্ব করে দলের লোকই। এরপরেও মানুষের জন্য মাঠে আছি। দিন শেষে জিতব।’
১৫ জুন কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন