কুমিল্লায় এমপি বাহারের নির্দেশে সাংবাদিক পেটানো শুরু

মোহাম্মদ শরিফুল আলম চৌধুরী, কুমিল্লা : কুমিল্লায় স্থানীয় সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের নির্দেশে একাত্তর টেলিভিশনের সাংবদিক ও ক্যামেরা পারসনের ওপর হামলা করা হয়েছে। 

বুধবার বেলা ১১টায় নগরীর শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামের ফটকে এ ঘটনা ঘটে।

ওই হামলার শিকাররা হলেন- কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, কুমিল্লা টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি ও একাত্তর টেলিভিশনের নিজস্ব প্রতিবেদক কাজী এনামুল হক ফারুক ও ক্যামেরা পারসন সাইদুর রহমান সোহাগ। 

কাজী এনামুল হক ফারুক জানান, অফিসের লাইভ প্রোগ্রাম ছিল। আমি যুক্ত হওয়ার জন্য স্টেডিয়াম এলাকায় আসি। এখানে স্থানীয় সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের নির্দেশে তার নেতাকর্মীরা আমার ওপর হামলা করে। এসময় তারা আমার ক্যামেরা পারসন সাইদুর রহমান সোহাগের ওপরও হামলা করে মোবাইল ও লাইভ ডিভাইস নিয়ে গেছে।

ক্যামেরা পারসন সোহাগ জানান, এমপি বাহারের নির্দেশে তার নেতাকর্মীরা আমাদের গালাগাল ও হামলা করে। তার পিএস আমাকে এলোপাথাড়ি মেরেছে। 

কুমিল্লা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক ও সময় টিভির সাংবাদিক বাহার রায়হান বলেন, আমরা কুমিল্লা-৬ সদর আসনের সংসদ সদস্য ও নৌকার প্রার্থী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের নির্বাচনী প্রচারের নিউজ কাভার করার জন্য আসি। সভা শেষে সাংবাদিকদের দেখে তিনি বলেন, কোন টিভির সাংবাদিক আমার কাভারেজে আসবে না। তখনই একাত্তর টেলিভিশনের সাংবাদিকদের দেখে তেঁড়ে আসেন এবং অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। তার নেতাকর্মীরা একাত্তরের প্রতিনিধি ও ক্যামেরা পারসনের গায়ে হাত তোলে। এসময় তাদের ডিভাইস ছিনিয়ে নেওয়া হয়। 

তিনি বলেন, শুধু আজই নয়, গত ১৮ ডিসেম্বর প্রচারের প্রথমদিন কুমিল্লার চাঁনপুর এলাকায় উনার উঠান বৈঠকে আমাকে দেখে স্টেজ থেকে ঢিল ছোড়েন। 

রায়হান বলেন, ২০১৫ সালে কুমিল্লার কান্দিরপাড়ে আওয়ামী লীগ-বিএনপির সংঘর্ষের সময় আমার ক্যামেরা নিয়ে যায়। আমার গায়েও হাত তোলে। আরেক ঘটনায় তিনি সময় টেলিভিশনের এমডি আহমেদ জুবায়ের ও আমিসহ চারজনের বিরুদ্ধে পাঁচ কোটি টাকার একটি মানহানি মামলা করে। ১২ অক্টোবর মদমুক্ত পূজা আয়োজনের আহবান করা নিয়ে তার বক্তব্যের ভিডিও প্রকাশ করায় স্থানীয় কুমিল্লার কাগজের প্রতিনিধিদের তিনি তার সমাবেশ থেকে বের করে দেন। 

গত ১৮ ডিসেম্বর বিএনপি-জামায়াতের কোনো কর্মীকে নির্বাচনে কোনো প্রার্থীর পক্ষে পাওয়া গেলে তাদের হাত-পা ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেন এমপি বাহার। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এ অভিযোগে কুমিল্লা সদর আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারকে একদিনে দুটি শোকজ করা হয়েছে। মঙ্গলবার তাকে শোকজ করেন কুমিল্লা-৬ সংসদীয় আসনে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান মো. সিরাজ উদ্দিন ইকবাল।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন