গতকাল রোববার সরেজমিনে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেখা যায়, ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত অনেক শিশুকে চিকিৎসা দিতে হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন অভিভাবকরা। সকাল থেকেই হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগের সামনে দীর্ঘ লাইন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে শিশুদের কোলে নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন অভিভাবকরা। অন্যদিকে ১৬ শয্যার শিশু ওয়ার্ডে কোনো শয্যা খালি নেই। কোম্পানিগঞ্জ নগরপাড় এলাকা থেকে ১৫ মাস বয়সী শিশু সন্তান নাজিফাকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন মা আছমা আক্তার। তিনি জানান, শীতের শুরু থেকেই নাজিফার শ্বাসকষ্ট, জ¦র ও কাশি ছিল। তিনি সন্তানকে নিয়ে চার দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
হাসপাতালের বেডে রহিমপুর গ্রামের রত্না আক্তার জানান, বাচ্চার পাতলা পায়খানা হওয়ার পর দুদিন আগে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ডাক্তার শিশুটিকে ভর্তি করান। এখন অবস্থা অনেকটা ভালো।
পাশের বেডেই শিশু সন্তান তাবাসসুমকে ওষুধ খাওয়াচ্ছিলেন মুরাদনগর সদরের আকলিমা আক্তার। তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে আনার পর ডাক্তার বলেছেন নিউমোনিয়া হয়েছে। সেজন্য ভর্তি করেছি। ডাক্তার নিয়মিত চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, মুরাদনগরে শীতের প্রকোপ বৃদ্ধির কারণে হাসপাতালে শীতকালীন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা এখন বেশি। হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগে আসা শিশুদের বেশিরভাগই জ¦র, ঠান্ডা, কাশি, নিউমোনিয়া ও কোল্ড ডায়রিয়ায় ভুগছে। জরুরি বিভাগে আসা রোগীদের পরিস্থিতি বুঝে ভর্তি এবং বহির্বিভাগের রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হচ্ছে। প্রতিদিন ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ১০০ থেকে ১৫০ রোগীকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এনামুল হক বলেন, শীতজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন বয়স্ক ও শিশুরা। এসব রোগ প্রতিরোধে শিশুদের খুব সাবধানে রাখতে হবে। যতটা পারা যায় সব বয়সের মানুষকে ঘরে থাকতে হবে। ঘরের বাইরে গেলে যথাযথ পোশাক পরতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিহিস্টামিন ও অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো যাবে না। শ্বাসকষ্ট হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করাতে হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন