এখনো হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন ণারী সাংবাদিক : এক সপ্তাহেও গ্রেপ্তার হয়নি কোনো আসামি

মোহাম্মদ শরিফুল আলম চৌধুরী, কুমিল্লা : কুমিল্লায় এক ণারী সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় ৭ দিন পার হলেও কোনো হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। কিন্তু সেই আহত সাংবাদিক এখনো রাজধানীর হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছেন।

এ ঘটনায় সচেতন মহলে জেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। একইসঙ্গে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জেলার সচেতন মহল ও গণমাধ্যমকর্মীরা।

ভুক্তভোগী সাংবাদিকের পরিবার জানান, গত ১৫ ফ্রেবুয়ারী শনিবার সকাল ৮টার দিকে আমি কুমিল্লা জেনারেল হসপিটাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হই। উপজেলার পাঁচপুকুরিয়া বাজার পেরিয়ে ব্রিজের রিকশার জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন সাংবাদিক ফাহিমা। এ সময় দুইটা বাইকে চারজন ব্যক্তি এসে তার পথরোধ করে দাঁড়ায়। তারা তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে এবং ধমক দিয়ে বলে কেন 'দাউদান্দিতে হাত বাড়ালেই মিলছে মাদক' এমন নিউজ করেছি! এক পর্যায়ে তারা তার ওড়না ধরে টান দিয়ে মাটিতে ফেলে বেধরক পিটিয়ে আহত এবং শারীরিক নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে তারা তাকে ছোড়া বের করে মেরে ফেলার চেষ্টা করলে সে চিৎকার দেয়। এতে লোকজন জড়ো হয়ে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে চান্দিনা মা মেডিকেল ও পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে নিয়ে যায়। তখন ওই দৃবৃত্তরা পালিয়ে যায়।

থানা সূত্রে জানা যায়, হামলার ঘটনায় ওই দিন রাতে ভুক্তভোগী সাংবাদিক বাদী হয়ে স্থানীয় ক্লিনিক ব্যবসায়ী পরিচয়দানকারী নুরুজ্জামান (৪০), শামিম (৩৮), ইব্রাহিম মোল্লাসহ (৪০) ৭ জনের নাম উল্লেখ করে মুরাদনগর থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন।

হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে পরদিন রোববার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন জেলার সাংবাদিক সংগঠনের নেতা ও কর্মরত সাংবাদিকরা। হামলার ৭ দিন পার হলেও অভিযুক্তরা এখনো রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, পুলিশ কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়ায় এখন পর্যন্ত কোনো হামলাকারী গ্রেপ্তার হয়নি। এতে অনেকটাই আশঙ্কায় রয়েছে হামলার শিকার গণমাধ্যমকর্মীরা। 

ভুক্তভোগী করতোয়ার সাংবাদিক ফাহিমা আক্তার প্রিয়া বলেন, মামলার পর থেকে অভিযুক্তরা কৌশলে হুমকি-ধামকি দিয়ে চলছে ও বিভিন্ন জায়গায় অপপ্রচার চালাচ্ছে। তবে দুঃখের বিষয় এখন পর্যন্ত কোনো অপরাধীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি। আমি আমার পরিবার নিয়ে শঙ্কায় রয়েছি। অপরাধীরা গ্রেপ্তার না হলে তারা যেকোনো মুহূর্তে আমার ক্ষতি করতে পারে। পুলিশের কাছে একটাই দাবি, দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হোক।

জানতে চাইলে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রহমান বলেন, আমরা যথেষ্ট চেষ্টা চালাচ্ছি। আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আসামির গা ঢাকা দেওয়ায় তাদের ধরতে একটু সময় লাগছে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন