বাংলাদেশের পরিস্থিতি কতটা খারাপ, হাসিনাকে কেন আশ্রয় দিয়েছে ভারত, ট্রাম্পকে বলেছেন মোদী

দ্যা ওয়্যাল : সাংবাদিক বৈঠকে ট্রাম্প সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, বাংলাদেশের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার তিনি নরেন্দ্র মোদীর উপর সঁপেছেন।

বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া নিয়ে চূড়ান্ত বিপাকে পড়ে গিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস সংযুক্ত আরব আমিরাশাহী থেকে বিকালে দেশে ফিরছেন। তারপর উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। যদিও ওয়াশিংটনে ট্রাম্প-মোদী বৈঠক এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ নিয়ে মন্তব্য সম্পর্কে ভিন্ন বয়ান প্রচার করতে শুরু করেছে ইউনুস সরকার। তারা বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট আওয়ামী লিগের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। যদিও ইউনুসের প্রেস উইং কিংবা সরকারের কোনও উপদেষ্টা এখনও সরকারিভাবে মুখ খোলেননি।

কী বলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প? ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নরেন্দ্র মোদীকে পাশে নিয়ে বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে এক প্রশ্নের জবাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, বাংলাদেশের সরকার পরিবর্তনের পেছনে মার্কিন ডিপ স্টেটের কোনও ভূমিকা ছিল না। 

ঘটনা হল, ক্ষমতাসীন কোন প্রেসিডেন্টের এমনটাই বলার কথা। তাছাড়া আওয়ামী লিগ কখনও আমেরিকার নাম করে কোনও অভিযোগ করেনি। যদিও নানা মহল থেকে হাসিনা সরকারের পতনের পিছনে মার্কিন ডিপ স্টেট অর্থাৎ সরকারি ক্ষমতার বেআইনি ব্যবহারকারীদের ভূমিকা ছিল বলে দাবি করা হয়ে থাকে। এই বিষয়ে বিগত বাইডেন জমানায়  নেতৃত্বদানকারী দক্ষিণ এশিয়ার দায়িত্বে থাকা মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রকের সহকারী সচিব ডোনাল্ড লু' কে সরিয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প। ওই পদে এসেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত এস পল কাপুর। 

ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, ট্রাম্পের অস্বীকার খুবই স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। সব প্রেসিডেন্ট, প্রাইম মিনিস্টারকেই নিজের দেশের মর্যাদা রক্ষা করতে হয়। তাতে জমানা নিয়ে ভাবার অবকাশ নেই। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার শুধু মার্কিন প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের একটি অংশই তুলে ধরছে।

আসলে সাংবাদিক বৈঠকে ট্রাম্প সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, বাংলাদেশের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার তিনি নরেন্দ্র মোদীর উপর সঁপেছেন।

কূটনৈতিক মহলের মতে, এর অর্থ হল, শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়া নিয়ে ভারত সরকারের অবস্থান নিয়ে মার্কিন প্রশাসন নাক গলাবে না। বাংলাদেশের বিষয়ে ভারতের পদক্ষেপেও হোয়াইট হাউস হস্তক্ষেপ করবে না। 

ট্রাম্প-মোদী বৈঠকের পর ভারতের বিদেশ সচিব মিস্রি জানান, মার্কিন প্রেসিডেন্টকে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের চলতি পরিস্থিতি 'ব্রিফ' করেছেন। বিক্রম মিস্রি জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত এক স্থিতিশীল সম্পর্ক চায়। কিন্তু চলতি পরিস্থিতি মোটেও তার সহায়ক নয়। 

পররাষ্ট্র মন্ত্রক সুত্রে জানা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী মোদী মার্কিন প্রেসিডেন্টকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশে কী অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে ভারত সরকার শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিল। কীভাবে একজন নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর জীবন ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলা হয়েছিল, ট্রাম্পকে জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী। 

হাসিনা দেশ ছাড়ার পর বাংলাদেশে ইসলামি মৌলবাদীদের হুঙ্কার, সংখ্যালয়ঘুদের জীবন কীভাবে বিপন্ন করে তোলা হয়েছে, তার বিশদ বর্ণনা ট্রাম্পের সামনে তুলে ধরেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। মনে করা হচ্ছে, এই কারণেই সাংবাদিক বৈঠকে ট্রাম্প বাংলাদেশ প্রসঙ্গ উত্থাপিত হওয়া মাত্র জানিয়ে দেন, এই বিষয়টি তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর উপর ছেড়ে দিয়েছেন।


তথ্য সূত্র : দ্যা ওয়াল

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন