এ ছাড়া এ উপজেলার ১৪নং নবীপুর পূর্ব নামক এক ইউনিয়নে বৈধ এবং অবৈধ মিলিয়ে ১৬টি ইটভাটা রয়েছে।
এক্ষেত্রে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেস্টার কঠোর নির্দেশনাও উপেক্ষা করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, এসব ইটভাটা বন্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে দফায় দফায় চিঠি দেওয়া হলেও উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ভাটা মালিকরা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। সরেজমিন দেখা গেছে, জেলার সবচেয়ে বেশি ইটভাটা মুরাদনগর উপজেলায়। প্রায় অর্ধশতাধিক ইটভাটার মধ্যে এ বছর সবটি ভাটায় কাজ চলছে। তারমধ্যে সবটিরই কোনো ছাড়পত্র নেই। নামিদামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোলঘেঁষেই এসব ইটভাটার অবস্থান। অভিযোগ রয়েছে, কুমিল্লা পরিবেশ অধিদপ্তরের এক সময়ের আলোচিত উপ-পরিচালক শওকত আরা কলি পরিবেশ বিধ্বংসী এসব ইটভাটার ছাড়পত্র দিয়েছেন। সে সময় কলির বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা হলে কর্তৃপক্ষ তাকে সরিয়ে নেয়। পরে গত দুই বছর ধরে বিতর্কিত ও পরিবেশ আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক অবস্থানে থাকা ৪৯ ভাটার অধিকাংশ ভাটারই ছাড়পত্র নবায়ন বন্ধ করে দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর। এরই মধ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেস্টা
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান দেশের সব অবৈধ ইটভাটা বন্ধের কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। কিন্তু মুরাদনগরে তা কার্যকর হচ্ছে না।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, নবীপুর পূর্ব ইউনিয়নের বাখরনগরে মেসার্স পাওয়ার ব্রিকস, ইসলাম ব্রিকস, মেসার্স সুফিয়া ব্রিকস, আরআরবি ব্রিকস, মেসার্স কেবিসি ব্রিকস, মেসার্স ইমন ব্রিকস, মেসার্স ইকরা ব্রিকস, শাপলা ব্রিকস, নবীপুর (পশ্চিম) এলাকার মেসার্স এসআর ব্রিকস ও মেসার্স বিবিসি ব্রিকস, মোহাম্মদপুরে মেসার্স জননী ব্রিকস, বাবুটিপাড়ার মেসার্স তিনতারা ব্রিকস, রায়তলার মেসার্স জনতা ব্রিকস ও ওয়ান ব্রিকস, ঘোড়াশালের মেসার্স এমবিসি ব্রিকস, বাখরাবাদে মেসার্স বিআরএস ব্রিকস, রায়পুরে মেসার্স এসআর ব্রিকস, ছালিয়াকান্দিতে মেসার্স মনির ব্রিকস, মেসার্স এমবিআই ব্রিকস, দিলালপুরে মেসার্স মোবারক ব্রিকস, সালপা এলাকার মেসার্স ইমরান ব্রিকস ও নহল এলাকায় মেসার্স রাবেয়া ব্রিকসের পরিবেশ ছাড়পত্র নবায়ন নেই। পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে এসব ইটভাটা পরিচালিত হচ্ছে। তবে বেশ কয়েকজন ভাটা মালিক জানান, আগে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে তাদের ছাড়পত্র দেওয়া হলেও এখন নবায়ন দেওয়া হচ্ছে না। যার ফলে অবৈধভাবেই কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে। এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোছাব্বের হোসেন রাজীব বলেন, পরিবেশ আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এমন কোনো ভাটার ছাড়পত্র নবায়ন করা হবে না। মুরাদনগরে যেসব ভাটা ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেছে আমরা তা সরেজমিন তদন্ত করে দেখছি। পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগে এরই মধ্যে কয়েকটি ভাটাকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়সার বলেন, অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে আমরা শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। ইতোমধ্যে সব উপজেলা প্রশাসনকে একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমাদের এ সংক্রান্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন