আলম মিয়া নামের একজন ব্যবসায়ী বলেন, মাত্র কয়েকদিন পরেই ঈদ। এমন সময় হরতাল দেয়া খুবই দুর্ভাগ্যজনক। ঝামেলা লাগছে ছাত্র আর শ্রমিকদের। মাঝখানে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে আমাদের। এই ধরনের কর্মসূচি যেন আর দেওয়া না হয় সেটাই আমাদের দাবি।
শফিকুল ইসলাম নামের একজন যাত্রী জানান, জরুরি প্রয়োজনে কুমিল্লা যাওয়ার জন্য মুরাদনগর সদরে এসে দেখি হরতাল চলতেছে। এটা কোন সমাধানের পথ হইতে পারে। কোনো কিছু হলেই সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে দাবি আদায় করা হয়। এখন আমাকে রিকশা ও সিএনজির সহায়তায় দুই ঘণ্টার পথ যেতে হবে ৪ ঘণ্টায়।
এদিকে হরতালের সমর্থনে কুমিল্লা জেলা পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়ন কোম্পানীগঞ্জ শাখার সভাপতি হাজী ইদ্রিস বলেন, কোম্পানীগঞ্জ বাজারের যানজট নিরসনে বাস-মালিক সমিতি বিভিন্ন পয়েন্টে কিছু শ্রমিক নিয়োগ দেয়। যার খরচ বাস মালিক সমিতি বহন করে থাকেন। দায়িত্বে থাকা লাইনম্যান আবুল কালামকে চাঁদাবাজ আখ্যা দিয়ে পুলিশে দেয় কিছু ছাত্র সমন্বয় নায়ক পরিচয় কারিরা। আর সেই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মালিক-শ্রমিকদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে প্রশাসন। পরিবহণ শ্রমিকরা তাদের বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও হয়রানি বন্ধের দাবিতে ধর্মঘট পালন করছে। যদি অনতিবিলম্বে পুলিশি হয়রানি বন্ধ ও মামলা প্রত্যাহার করা না হয় তাহলে আমরা আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবো।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার (২৪ মার্চ) ইফতারের আগে বাসস্ট্যান্ডে পরিবহনে চাঁদাবাজির অভিযোগ আনে মুরাদনগর উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক উবায়দুল সিদ্দিকী। এ ঘটনায় তাঁর সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান শ্রমিক দল নেতা আবুল কালাম। পরে আবুল কালামকে আটক করে মুরাদনগর থানা–পুলিশ। তাঁকে প্রধান আসামি করে চাঁদাবাজি ও মারধরের অভিযোগ এনে মামলা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আবু ফয়সাল। উবায়দুল সিদ্দিকী স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার চাচাতো ভাই। পড়ে শ্রমিক নেতা আবুল কালামকে ছাড়িয়ে আনতে গত সোমবার রাতেই মুরাদনগর থানার সামনে মিছিল করে বাস মালিক-শ্রমিকের লোকজন। পরে থানায় হামলা চালিয়ে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা, পুলিশের ওপর হামলাসহ কয়েকটি অভিযোগে মুরাদনগর থানার উপপরিদর্শক মো. আলী আক্কাস বাদী হয়ে আরো একটি মামলা করেন। এ মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে যুবদল নেতা মাসুদ রানাকে। ওই মামলায় সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে মঙ্গলবার সকালে শ্রমিক দল নেতা আবুল কালাম এবং থানায় হামলার মামলায় গ্রেপ্তার পাঁচজনসহ ছয়জনকে কুমিল্লার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন