কায়কোকাদের স্মার্ট কৌশলে ধরাশায়ী এনসিপি : ভেস্তে গেল মুরাদনগর ছাত্র-জনতার সংবাদ সম্মেলন

ফাহিমা বেগম প্রিয়া, কুমিল্লা : বদলে গেছে ক্যালেন্ডারের শেষ পাতা। সেই সঙ্গে বদলেছে বছরও। বিদায় নিয়েছে ১৪৩১ বাংলা সাল। ঘরে এসেছে আরেকটি নতুন বাংলা বছর। বিদায়ি বছরের শুরু থেকেই দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো সরগরম ছিল কুমিল্রার মুরাদনগরের রাজনৈতিক অঙ্গন। সামনের ভোটকে কেন্দ্র করে মাঠ দখলের লড়াইয়ে নামে বিএনপি। গত ৫ আগস্টের আগে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ডাক দিয়ে আন্দোলনে নামে তারা। নির্বাচনকালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি, রাষ্ট্র সংস্কারসহ বিভিন্ন দফা-ওয়ারি কর্মসূচি দেয় বিএনপি। বিএনপির আন্দোলন ঘিরে নৈরাজ্য ও নাশকতা হতে পারে- দাবি করে পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে মাঠে থাকে তখন আওয়ামী লীগ। তারপরও জনগণের জানমাল রক্ষায় সতর্ক পাহারা আর শান্তি সমাবেশের মধ্যদিয়ে রাজপথে সজাগ সর্বত্রে থাকে বিএনপির কায়কোবাদ সমর্থিত নেতাকর্মীরা।

দেশের গণতন্ত্র ও নির্বাচন ইস্যুতে বরাবরই সরব ছিল মফস্বলের চা দোকান খেকে কূটনৈতিক পাড়া। আওয়ামী লীগ-বিএনপির কর্মসূচিতে বরাবই নজর ছিল সাধারন মানুষ গুলো।

গত ৫ আগস্টের পর থেকে গুটি কয়েক তরুনদের নিয়ে মুরাদনগরের একটি পক্ষ মুরাদনগর বিএনপি তথা এ আসনের পাঁচবারের সাবেক এমপি ও মন্ত্রী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও বিষোদগার করেন।

গত ৫ আগন্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকে বছরজুড়ে মাঠের রাজনীতিতে প্রশাসনের সহযোগীতায় বৈষম্য বিরোধী সমন্বয়করা চাঙা থাকলেও কায়কোবাদ দেশের মাটিতে পা রাখার পর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বর্তমান মুরাদনগরের এনসিপি। বিভিন্ন ইস্যুতে ডাকা আন্দোলনের স্বপ্ন ভঙ্গ হয় তাদের। শেষ পর্যন্ত কায়কোবাদের কৌশলী অবস্থানের কারণে ধরাশয়ী হয় এনসিপি। এনসিপির অদূরদর্শিতায় দলটির মুরাদনগের দায়িত্বে কারা আছেন তারা কারা এমন প্রশ্ন রেখে আন্দোলনে জনসাধারণ সাড়া দেয়নি বলেও দাবি করেন সাধারন জনগন ও বিএনপির নেতাকর্মীরা।

সর্বশেষ গত রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে মুরাদনগর ছাত্র-জনতার ব্যানারে সংবাদ সম্মেলনে বিস্ময়করভাবে ছাত্রলীগ নেতার পক্ষে সাফাই দেওয়া হয়েছে। মুরাদনগর এনসিপির নেতারা উপস্থিত হয়ে যেসব বক্তব্য দেন, সেখানে কুমিল্লা-৩ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সাংসদ ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন ও জাহাঙ্গীর আলম সরকারের বিষয়ে কোনো শব্দই উচ্চারণ হয়নি, বরং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ও হুইপ এবং পাঁচবারের এমপি কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক বক্তব্য বারবার উচ্চারিত হয়েছে।

কেন ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ নেতাদের কেউ কেউ এনসিপিতে ভিড়েছে মুরাদনগরে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠকারী এনসিপি নেতা কামরুল হাসান কেরান ও অন্যরা মুখ চাওয়া-চাওয়ি করা ছাড়া জুতসই কোনো উত্তর দিতে পারেননি।

সংবাদ সম্মেলনে আয়োজকরা দাবি করেন, কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের অনুগামীরা মুরাদনগরের দখল, চাঁদাবাজি ও আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করছে। তাদের অত্যাচারে মানুষ অতিষ্ঠ। এমনকি থানা পর্যন্ত আক্রমণ করা হচ্ছে। এসব থেকে পরিত্রাণ পেতে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চান তারা।

সংবাদ সম্মেলন শেষে উপস্থিত একজন সাংবাদিক জানতে চান- মুরাদনগরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের এনসিপিতে ভেড়ানো হচ্ছে। যেমন- গোলাম কিবরিয়া, যুবলীগের আনোয়ার হোসেন। এটা কেন? এই প্রশ্ন শোনার পরই পেছন থেকে হইহুল্লোড় শুরু হয়। তারা বলতে থাকেন- এটা কোনো প্রশ্ন না। আমরা মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করতে এসেছি। একইভাবে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত কেউ তার উত্তর দেননি।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন