দেবীদ্বারে ৫ মাসের অন্তঃস্বত্বা এক গৃহবধূকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় উদ্ধার করেছে দেবীদ্বার থানা পুলিশ। ঘটনা অনুসন্ধানে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রুমী আক্তারের স্বামী মোঃ এমরান ও ভাসুর মোঃ কালু মিয়া কে আটক করেছে পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটে সোমবার দিবাগত শেষ রাতের কোন এক সময় উপজেলার জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের বারুর গ্রামের আশেক মিয়ার বাড়িতে। নিহতার স্বামী এমরান (১৯) মঙ্গলবার ভোরে ঘরের তীরের সাথে গলায় ওড়না পেচিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করা তার স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন ও পুলিশকে খবর দেয়।
স্থানীয়রা জানান, গৃহবধূ রুমি আক্তার (১৮) বারুর গ্রামের আব্দুল আজিজ’র দ্বিতীয় স্ত্রীর প্রথম পুত্র ট্রাক্টর শ্রমিক মোঃ এমরান হোসেন’র স্ত্রী এবং একই ইউনিয়নের নারায়নপুর (ছগুরা) গ্রামের মাদার বক্সি বাড়ির মৃত: সাহেব আলীর কণ্যা। প্রায় সাড়ে ৬ মাস পূর্বে ইমরানের সাথে রুমির বিয়ে হয়। রুমি ৫ মাসের অন্ত:স্বত্বা ছিল। মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ এসে নিহতার মরদেহের ছোরতহাল রিপোর্ট তৈরীপূর্বক ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকের কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। স্থানীয়রা আরো জানান, স্বামীর পরিবারের দাবী পারিবারিক কথা কাটা কাটির এক পর্যায়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। নিহতার মায়ের দাবী তাকে হত্যা করে ফাঁসীতে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করছে।
রুমি আক্তার’র বোন সেফালী আক্তার বলেন, বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য রুমির উপর চলত শারিরীক নির্যাতন। আমরা বোনের সুখের জন্য বিভিন্ন সময়ে নগদ টাকাসহ ৮০ হাজার টাকার ফার্নিচার কিনে দেই। সোমবার নতুন করে আরো ৬ হাজার টাকার দাবীতে আমর বোনকে পরিবারের লোকজন মিলে হত্যা করে ঘরের তীরের সাথে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করে।
নিহতার মা’ পাখী বেগম ও খালা রুপালী বেগম বলেন, রুমিকে তার স্বামী, দেবর/ ভাসুর এবং শ্বশুর- শ্বাশুরী মিলে মারধরে হত্যা করেছে। হত্যার বিষয়টি ঢাকতে তার গলায় উড়না পেঁচিয়ে তীরের সাথে বেঁধে রাখে। ফাঁসীতে মারা গেলে গলায় ফাঁস লাগানো থাকত, ঘারের অংশে ফাঁস থাকার কথা নয়, পা মাটিতে ছিল, দাড়ানো অবস্থায় হাতগুলো মুষ্টিবদ্ধ ছিল, একটি চেয়ার পাশে রাখা হলেও, চোখ উল্টানো কিংবা জিহবা বের করা ছিলনা।
নিহতার শ্বশুর আব্দুল আজিজ জানান, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কি নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছে জানিনা। তবে ভোরে শুনতে পাই সে আত্মহত্যা করেছে।
ওই মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে। গৃহবধূর মরদেহ ঝুলন্ত দেহটি সাভাবিক অবস্থায় দাড়ানো ও হাতগুলো মুষ্টিবদ্ধ ছিল। ফাঁসটি গলার অংশে না থেকে ঘারের অংশে হেলানো ছিল। পুলিশ ওই ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী এমরান ও ভাসুর কালু মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।
দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আরিফুর রহমান জানান, নিহত গৃহবধূর মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য কুমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসার পরই ঘটনাটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা নিশ্চিত বলা যাবে। ঘটনাটির তদন্ত চলছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন