মোহাম্মদ শরিফুল আলম চৌধুরী : কুমিল্লায় এক ইউপি চেয়ারম্যানের কোমরে রাখা পিস্তলের ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। তিনি জেলার বরুড়া উপজেলার ভবানী পুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান।
এর আগে গত ২০২২ সালের ২৪ আগস্ট তার নামে কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ডের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সেখানেও অনেক নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন অনেকে।
তবে ওই ইউপি চেয়ারম্যান দাবি এটা তার লাইসেন্স করা পিস্তল, তাই কোমরে রাখতেই পারেন।
শনিবার (১৮ ফ্রেরুয়ারি) সন্ধ্যা থেকে ভাইরাল হওয়া ওই ছবিতে দেখা যায় দুইজন ব্যক্তির হাত থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা গ্রহণ করছেন চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান। এসময় প্রকাশ্যে চেয়ারম্যানের কোমরের ডানপাশে প্রদর্শন করে রাখা হয়েছে পিস্তল। যদিও ওই ইউপি চেয়ারম্যানের দাবি পিস্তলটি তার লাইসেন্স করা। লাইসেন্স করা হলেও এভাবে অস্ত্র রাখা নিয়ে জনমনে নেতিবাচক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা পুলিশের একজন কর্মকতা বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা ২০১৬ এর ২৫ নম্বরের ক অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি স্বীয় লাইসেন্স এন্ট্রিকৃত অস্ত্র আত্মরক্ষার নিজে বহন/ ব্যবহার করতে পারবেন। তবে অন্যের ভীতি/ বিরক্তি উদ্রেক করতে পারে এরূপভাবে প্রদর্শন করতে পারবেন না। ওই কর্মকতা আরও বলেন, ভাইরাল হওয়া ছবিটিতে চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান যেভাবে তার অস্ত্র প্রদর্শন করেছেন তাতে জনমনে আতংক সৃষ্টি হওয়াটা একেবারেই স্বাভাবিক। সাধারণ জনগণের মনে যা ভীতির সঞ্চার করবে সন্দেহাতীত।
তবে চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমার এ অস্ত্রের লাইসেন্স আছে। জেলা প্রশাসন থেকে লাইসেন্স পাওয়া অস্ত্র আমার সাথে রাখতে পারব, আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখুন। রোববার সকালে বরুড়া থানার ওসি ইকবাল বাহার মজুমদার বলেন, ওই চেয়ারম্যান অস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়ার পর থানায় এসে এন্টি করেছেন এটা জানি। কোমরে অস্ত্র রাখার বিষয়টি আইনে কি বলা আছে তা দেখবো।
সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) এর কুমিল্লার সাবেক সভাপতি আলমগীর খান বলেন, ছবিটি আমি দেখেছি। চেয়ারম্যান যেভাবে কোমরে পিস্তলটি রেখেছেন যেকোনো মানুষের মনে ভীতি সৃষ্টি হবে। আমি প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করবো, ওই চেয়ারম্যানের লাইসেন্স যদি থেকেই থাকে তবে সেই লাইসেন্স বাতিল করে যত দ্রুত সম্ভব তার কাছ থেকে অস্ত্রটি উদ্ধার করা হোক।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম আজ সকালে বলেন, ওই চেয়ারম্যানের প্রকাশ্যে কোমরে অস্ত্র রাখার একটি ছবি আমাদের কাছে এসেছে, তদন্ত করে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে ইউপি চেয়ারম্যান খলিলুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন