রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও নির্বাচন বিশ্লেষকদের মতে, জুলাই-আগস্ট মাসের সহিংস আন্দোলনে ব্যাপক প্রাণহানি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায় আওয়ামী লীগকে নিতেই হবে। সেই সময় ক্ষমতায় থাকায় দলটির দায় অস্বীকার করার সুযোগ নেই।
জাতিসংঘের সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, জুলাই-আগস্টের সহিংসতায় ১৪শ’ মানুষ নিহত হয়েছে। এতে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের প্রমাণ মিলেছে, যা আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় বিচারযোগ্য।
শনিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের এক জরুরি বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, এসব ঘটনার বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। এরইমধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে সংশোধনী এনে প্রজ্ঞাপনও জারি হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. সাব্বীর আহমেদ বলেন, “এটি শেখ হাসিনার জন্য নিজেকে গুছিয়ে নেয়ার একটি সময় হতে পারে। তবে আওয়ামী লীগ যদি ফিরতে চায়, তাহলে নেতৃত্বের আমূল পরিবর্তন দরকার। দীর্ঘদিনের কেন্দ্রিক নেতৃত্বে এখন পরিবর্তনের সময় এসেছে।”
তিনি আরও বলেন, “এই মুহূর্তে যে রাজনৈতিক শূন্যতা তৈরি হচ্ছে, তা বিএনপির জন্য লাভজনক। সরকার এই পদক্ষেপ নেয়ায় বিএনপির ওপর কোনো দায় বর্তায়নি, বরং তারা জনগণের সহানুভূতি ও আওয়ামী লীগ সমর্থকদের একটি অংশ পেতে পারে।”
নির্বাচন কমিশনের সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলি জানান, এই অবস্থায় নির্বাচন কমিশন চাইলে আওয়ামী লীগের নিবন্ধনও স্থগিত রাখতে পারে। এক্ষেত্রে দলটি আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ হারাতে পারে।
তিনি বলেন, “কার্যক্রম স্থগিত হলে দলের নিবন্ধনও স্থগিত রাখা হতে পারে। এর মানে ইসির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যাবে—এতে দলটি নির্বাচনেও অংশ নিতে পারবে না।”
উল্লেখ্য, এর আগেও নানা সময়ে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছিল। কিন্তু প্রতিবারই দলটি নতুন রূপে ফিরে এসেছে। তাই অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, এই সাময়িক স্থগিতাদেশ হয়তো দলের জন্য একধরনের রাজনৈতিক 'রিসেট' বোতাম হিসেবে কাজ করতে পারে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন