স্থানীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত নাজমুল হাসান মোটরসাইকেলযোগে মধ্যরাতে কায়কোবাদ সাহেবের বাড়িতে গিয়ে সজোরে দরজায় আঘাত করেন এবং অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন।
তথ্য মতে, তিনি বাড়ির ভেতরে থাকা কায়কোবাদের ভাগিনা ও মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সোহেল আহমেদ বাবুর ওপর হামলা চালানোর চেষ্টা করেন এবং ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন। লোকজন বাধা দিলে নাজমুল হাসান মাতাল সেজে চিৎকার চেঁচামেচি, গালিগালাজ এবং হত্যার হুমকি দিতে থাকেন।
এ সময় উপস্থিত জনতার কাছে তিনি নিজেকে ‘কালা মুর্শিদ বাহিনীর লোক’ পরিচয় দিয়ে বলেন, “এ বাড়িতে থাকতে হলে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দিতে হবে।” পুলিশে খবর দিলে সে পুলিশের সাথেও ধস্তাধস্তি করে। পরে মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদুর রহমান নিজেই অতিরিক্ত ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, নাজমুল হাসান দীর্ঘদিন ধরে সাবেক এমপি ইউসুফ হারুনের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে এলাকায় বিএনপি, জামায়াত ও সাধারণ মানুষের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়ে আসছিলেন। পাশাপাশি তিনি নিয়মিত চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে মুরাদনগর থানায় চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, ধর্ষণসহ ১১টি মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
এই ঘটনায় মুরাদনগরের সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা নায়েব আলী বলেন, “যেখানে জাতীয় নেতা কায়কোবাদ সাহেবের বাড়িও নিরাপদ নয়, সেখানে সাধারণ মানুষ কতটা নিরাপদ—তা সহজেই অনুমেয়।”
অপর এক বাসিন্দা মুজিবুল হক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “থানার খুব কাছেই কায়কোবাদ সাহেবের বাড়ি। অথচ পুলিশের নাকের ডগায় এই ধরনের হামলা হয়েছে—এটা মুরাদনগরের জন্য লজ্জাজনক ও উদ্বেগজনক ঘটনা।”
এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান বলেন, “নাজমুল হাসানের বিরুদ্ধে পূর্বের একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। সে অনুযায়ী তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। গত রাতের ঘটনায় আলাদা কোনো মামলা হলে তা রেজিস্টারভুক্ত করা হবে।”
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন