ক্ষমতার পেছনে কারা? একই দিনে হামিদের দেশত্যাগ ও আইভীর গ্রেফতার: দৃশ্যপট বদলের শুরু?

মোহাম্মদ শরিফুল আলম চৌধুরী, বিশেষ প্রতিবেদক : নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

অপরদিকে, একই দিনে রাষ্ট্রীয় প্রটোকল অনুসরণ করে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে দেশ ত্যাগ করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
এই দুই ঘটনার অভূতপূর্ব সংঘটন রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাঈনুদ্দিন কাদিরের আদালতে হাজির করা হলে আইভীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।
তার বিরুদ্ধে ২০২২ সালে সিদ্ধিরগঞ্জে গার্মেন্ট শ্রমিক মিনারুল ইসলাম হত্যার অভিযোগে দায়ের হওয়া একটি মামলার প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত আসে।
জানা গেছে, শুক্রবার দুপুরে তাকে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে স্থানান্তর করে ঢাকার কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। জেলা কারাগারের জেল সুপার মো. ফোরকান ওয়াহিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অন্যদিকে, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ শুক্রবার সকালে থাই এয়ারওয়েজের একটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে দেশ ত্যাগ করেন।
যদিও তার গন্তব্য সম্পর্কে কোনও আনুষ্ঠানিক তথ্য জানায়নি সরকারি সংস্থা বা গোয়েন্দা মহল, তবে বিশ্বস্ত সূত্র বলছে—তিনি ব্যাংককের উদ্দেশে যাত্রা করেছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে একটি 'রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ' গঠনের গুঞ্জন উঠেছিল, যেখানে আবদুল হামিদ ছিলেন নেতৃত্বে এবং আইভী ছিলেন সম্ভাব্য সাধারণ সম্পাদক।
এই প্রেক্ষাপটে একই দিনে একজনের বিদেশগমন ও অন্যজনের গ্রেফতারকে নিছক কাকতালীয় ভাবছে না রাজনৈতিক মহল।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি রাষ্ট্রীয় কাঠামোর অভ্যন্তরে একটি শক্তি পুনর্বিন্যাসের ইঙ্গিত।
প্রশাসনের ছায়া বলয়ের মধ্যেই কারা এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, কে কার তালিকায় আছেন—তা নিয়ে আলোচনা চলছে প্রশাসনের ভেতরেও।
সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টি তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে।
হ্যাশট্যাগ #SaveIvy, #RefinedAL, #PowerShiftBD ব্যবহার করে অসংখ্য পোস্টে মানুষ আইভীর মুক্তি দাবি করছেন এবং বর্তমান ক্ষমতার বলয়ের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।
একজন রাজনৈতিক গবেষক মন্তব্য করেন—“এটি কেবল শুরু হতে পারে। ভবিষ্যতে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এই তালিকায় যুক্ত হতে পারেন।”
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী কাশিমপুর কারাগারে আছেন, এবং আবদুল হামিদের অবস্থান নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন