বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও কিশোর গ্যাং–সংক্রান্ত মামলায় সরকারি কৌঁসুলিদের নির্দেশনা, মানবাধিকার ও আইনি যুক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন
মোহাম্মদ শরিফুল আলম চৌধুরী, কুমিল্লা : কুমিল্লায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা এবং কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে করা দুটি মামলায় আসামিদের পক্ষে আদালতে না দাঁড়াতে সরকারি আইনজীবীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) কুমিল্লা জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. কাইমুল হক রিংকু ও সরকারি কৌঁসুলি (জিপি) মো. তারেক আবদুল্লাহ স্বাক্ষরিত একটি নির্দেশনায় বিষয়টি জানানো হয়। তবে এই নির্দেশনার খবর বুধবার (৩০ এপ্রিল) প্রকাশ্যে আসে।
নির্দেশনায় বলা হয়, ‘এতদ্বারা কুমিল্লা জেলার সকল সরকারি আইন কর্মকর্তা ও সরকারি কৌঁসুলিদের জানানো যাইতেছে যে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলাকারী ও কিশোর গ্যাং–সংশ্লিষ্ট কোনো মামলায় আসামিপক্ষে কোনো প্রকার আইনি সহায়তা না দেওয়ার জন্য আপনাদের বিশেষভাবে অনুরোধসহ নির্দেশ প্রদান করা হইল।’
তবে নির্দেশনায় আসামিপক্ষ বলতে নির্দিষ্ট কারও নাম বা মামলা নম্বর উল্লেখ না থাকায় এটি কিছুটা অস্পষ্ট বলে মন্তব্য করেছেন কুমিল্লার কয়েকজন সিনিয়র আইনজীবী।
বিভিন্ন মহলের প্রতিক্রিয়া : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আবু রায়হান বলেন, "এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত ইতিবাচক। আইনজীবীদের ধন্যবাদ জানাই। অপরাধীদের সহায়তা বন্ধ করতে এমন উদ্যোগ দেশের অন্যান্য জেলাতেও অনুসরণ করা উচিত।"
কুমিল্লার সচেতন নাগরিক কমিটির সাবেক সভাপতি শাহ মো. আলমগীর খান বলেন, "গণমুখী সিদ্ধান্ত। এতে অপরাধপ্রবণতা কমবে।"
তবে মানবাধিকারকর্মীদের মতে, আসামিপক্ষে আইনি সহায়তা পাওয়া প্রত্যেক নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। একপক্ষকে অগ্রাধিকার দিয়ে অন্যপক্ষকে বঞ্চিত করা হলে তা আইনি প্রক্রিয়ার ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।
কুমিল্লা জেলা পিপি মো. কাইমুল হক রিংকু বলেন, “গণআন্দোলনে যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁরা এখনো ভুগছেন। অথচ আমাদেরই অনেকে সেই মামলায় আসামিদের পক্ষে দাঁড়াচ্ছেন। তাঁদের মৌখিকভাবে বলেও শুনিনি, তাই লিখিতভাবে সবাইকে জানানো হয়েছে।”
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন