কাস্তে হাতে অভিনয়! ধান কাটলেন দুই উপদেষ্টা : মাঠে নেমে ছবি তোলার মহোৎসব

মোহাম্মদ শরিফুল আলম চৌধুরী: দেশের সবচেয়ে বড় নাট্যমঞ্চের নতুন নাম হতে পারে ‘আড়িয়ল বিল’। কারণ, মুন্সীগঞ্জের এই ঐতিহ্যবাহী বিলে শনিবার বিকেলে দেখা গেল দুই উপদেষ্টার এক অভিনব ধান কাটার মহড়া!

স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং শিল্প ও গৃহায়ণ উপদেষ্টা আদিলুর রহমান ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে কৃষকদের সঙ্গে খানিকটা ধান কাটলেন। ব্যাস, এরপরই শুরু হলো বক্তৃতার ফুলঝুড়ি—দুর্নীতি বন্ধ, মাটি কাটা বন্ধ, চেকপোস্ট বসানোর অঙ্গীকার... সব যেন বিলের পানিতে ভেসে যাওয়ার মত প্রতিশ্রুতি।

স্থানীয় কৃষকরা যখন হাড়ভাঙা খাটুনিতে প্রকৃত ধান কাটছিলেন, তখন উপদেষ্টারা হাতে কাঁচি নিয়ে কিছু সময় ‘কাটাকাটি’ সেরে ফটোসেশনে ব্যস্ত ছিলেন। একবার কেউ রশি ধরে ধান তোলেন, আবার কেউ কাস্তে উঁচিয়ে ক্যামেরার দিকে হাসি ছুড়েন—আহা, কী প্রাণচাঞ্চল্য!

উপদেষ্টাদের ভাষ্যমতে, "আড়িয়ল বিলের বৈচিত্র্য রক্ষা করা হবে।" একই সাথে ঘোষণা এলো—"ভেকু দিয়ে মাটি কাটার দুঃসাহস দেখালে চেকপোস্ট দিয়ে থামানো হবে!"

কিন্তু আশপাশের কৃষকরা খোঁচা মেরে বললেন,

ভাই, চেকপোস্ট আগে মনের মধ্যে বসান, বিলের চারদিকে বসাতে সময় তো লাগে!

উপদেষ্টাদের তালিকাভুক্ত প্রতিশ্রুতির প্যাকেজে ছিল দুর্নীতি বন্ধ, খাল খনন, শাক-সবজি সংরক্ষণের জন্য হিমাগার নির্মাণও। তবে এগুলো শুনে অনেকের মুখে মৃদু হাসি ফুটেছিল, যেন তারা জানেন—বিলের শস্যের চেয়ে প্রতিশ্রুতি বেশি ফলবে!

উপস্থিত ছিলেন মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক ফাতেমাতুল জান্নাত, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শামসুল আলম সরকার, কৃষি কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার মোহন্তসহ আরও অনেকে।

সবাই মিলে ধানখেতের ফাঁকে দাঁড়িয়ে শুনলেন কীভাবে দেশের উন্নয়ন হবে—ক্যামেরার এক ক্লিকে!

শেষমেশ কৃষকরা বলছিলেন,

ধান কম কাটলেন, ছবি বেশি কাটলেন!

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন